মাগুরা প্রতিনিধি:-
“শৃঙ্খল মুক্ত সাংবাদিকতা চাই” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে প্রেসক্লাবে মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকালে মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিকের সঞ্চালনায় দিবসটির ইতিহাস তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের মাঝে তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাগুরা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিক খান শরাফত হোসেন, ওয়ালিয়র রহমান, অ্যাডভোকেট অমিত মিত্র, অ্যাডভোকেট মাসুম বিল্লাহ কলিন্সসহ মাগুরা প্রেসক্লাবের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।
এ সময় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলেই প্রথম টার্গেট করে সংবাদমাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেও একই পথ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ। বিগত ১৬ বছরে জনপ্রিয় অসংখ্য সংবাদপত্র, বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে কয়েক হাজার সাংবাদিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দেয়। অগণতান্ত্রিক সরকারের কালো থাবায় সংবাদমাধ্যম ছিল পুরোপুরি শৃঙ্খলিত। সরকারের রক্তচক্ষুর সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে। বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অকল্পনীয় হুমকির মুখে পড়ে সাংবাদিকদের জীবন ও জীবিকা।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিগত বছরের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বাধীন গণমাধ্যমবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বহাল তবিয়তে থেকে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল, মত, পথ নির্বিশেষে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য ১৯৭৫ সালের এই দিনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সরকার নিয়ন্ত্রিত চারটি পত্রিকা ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ কারণে ১৯৭৮ সালে অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বার্ষিক কাউন্সিলে গৃহীত সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনটিকে কালো দিবস ঘোষণা করা হয়।
১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক কালো দিবস। এদিনে তৎকালীন আওয়ামী বাকশালি শাসকগোষ্ঠী তাদের অনুগত ৪টি সংবাদপত্র রেখে গোটা জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিলো। ফলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদ কর্মী বেকার হয়ে পড়েছিলো। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া হয়। রাতারাতি বেকার হয়ে পড়েছিলেন কয়েক হাজার সংবাদকর্মী। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার।