শুভ্র মজুমদার,কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর পটল গ্রাম ফুল ঝাড়ু তৈরির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে, যা এলাকাবাসীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছে। প্রতি মাসে এই গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার ঝাড়ু বিক্রি হয়, যা গ্রামের মানুষের জন্য বড় ধরনের আয়ের উৎস। এই ঝাড়ু তৈরির কাজ মূলত পাহাড়ি উলু ফুল দিয়ে করা হয় ।
ঝাড়ু তৈরির শিল্পটি শুধু গ্রামে কাজের সুযোগ তৈরি করেনি, বরং উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। পুরুষ, মহিলা, এমনকি শিশুরাও ঝাড়ু তৈরির বিভিন্ন ধাপে যুক্ত থাকেন, যেখানে নারীরা ফিটিং এবং শিশুরা টেপ পেঁচানোর কাজ করে।
তবে বর্তমানে উলু ফুলের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন সমস্যাসহ নানা সংকটে কুটির শিল্পটির অগ্রযাত্রা হুমকির মুখে পড়েছে বলে দাবি কারখানা মালিকদের। তারা বলেন, ‘উলু ফুলগুলো আমরা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কাপ্তাই, বান্দরবান, কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করি। আগের চেয়ে খরচ অনেক বেশি। সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে পণ্য আনলেও রাস্তাঘাটে আমরা নির্যাতিত হই। আগে ভালো বিক্রি হইতো। কারণ ব্যবসায়ী কম ছিলো। এখন ব্যবসায়ী বাড়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র পাইকারি বাজারে এই ঝাড়ুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রতি পিস ঝাড়ুর পাইকারি দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এতে প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ সারা দেশে এই ঝাড়ুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যা এলাকাবাসীর জন্য আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ঝাড়ু ব্যবসায়ী মো. নুর উদ্দীন বলেন, ৮ বছর আগে পাহাড়ি উলু ফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরির কাজ শুরু করেন। এতে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছেন। আমার পরিবার-আত্মীয় স্বজনসহ ১৫ থেকে ২০ জনের মতো কাজ করতো। তবে আগের মতো কাজ নাই।’
শ্রমিকরা বলেন, ‘আমরা এখানে প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর যাবত কাজ করতেছি। আগে বেতন কম পাইতাম কিন্তু এখন ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা পাই।
পটল এলাকার ঝাড়ু ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা মো. নজরুল ইসলাম জানান, ‘পণ্যের পরিবহন খরচ অত্যাধিক যা বলার মতো না। একগাড়িতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। সবমিলিয়ে এখানে ১০ হাজারের মতো কর্মসংস্থান রয়েছে।