মোঃ সাইফুল্লাহ:
চীনা ভাষা গবেষণায় পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনে বাংলাদেশের একমাত্র কৃতিত্ব অর্জনারী কুষ্টিয়ার গবেষক ড, মোহাম্মদ আলী।
এদেশে জন্মগ্ৰহণ করেও যিনি বিদেশি ভাষা গবেষণায় রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চীনা ভাষার মতো জটিল ভাষা গবেষণায় রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে চীনাভাষা গবেষণায় অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্ৰী। তিনি ২০০৯ সালে চীন সরকারের বৃত্তি নিয়ে চলে যান চায়না ‘দক্ষিণ-পশ্চিম বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রবর্তী স্তরের চীনাভাষা শেখার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃতিত্বের সাথে ভালো ফলাফলসহ চীনাভাষা শেখা শেষে “চীনা অক্ষরের মধ্যে নৈতিক প্রণোদনা অনুসন্ধান” (Study Of Moral Sprit In Chinese Characters) বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিই বাংলাদেশর একমাত্র ব্যক্তি, যার রয়েছে চীনাভাষা গবেষণায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের গৌরব।
পরবর্তীতে তিনি দেশে ফিরে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চীনাভাষা শিক্ষার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘ইদাই ইলু চাইনিজ ইনস্টিটিউট’। বর্তমানে এখানে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং গড়ে তুলেছেন চীনাভাষায় দক্ষ মানবসম্পদ। একইসাথে দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবেও তিনি চীনাভাষা শেখাচ্ছেন। তিনি রচনা, সম্পাদনা ও অনুবাদ করেছেন চীনাভাষা বিষয়ক একাধিক গ্ৰন্থ। সেগুলো হচ্ছে- “ইদাই ইলু চীনা-বাংলা অভিধান” (২০১৩), “আমার প্রথম চাইনিজ বই” (চীনাভাষা শেখার বই) (২০১৬), “দৈনন্দিন সর্বচ্চ ব্যবহৃত ১০০০ চাইনিজ অক্ষর” (২০১৬), “হীরক সম্ভাবনার চীনদেশ” (২০১৭), “চীনাভাষায় বাংলা শিখি” (চীনাদের বাংলা শেখার বই) (২০১৭), “চীনা শব্দ ভাণ্ডার” (HSK 1-4) (২০২০), “সরল চীনা ব্যাকরণ” (২০২১), ” চীনা বর্ণমালা” (২০২৩), অনুবাদ করেছেন “মু প্রাসাদের ঝড় বাদল” (মুফু ফাংউইন; মূলঃ মু গুয়াং) (২০১৭), “সোনালী বিবাহ বার্ষিকী” (যিন হূন; মূলঃ ওয়ান ওয়ানফ্বিং) (২০১৮),”হৃদয় তারার অশ্রুমুক্তা” (স্বিনস্বিংদা লেইগুয়াং; মূলঃ চ্বৌ ফ্বিংজ্বি) (২০১৯), “চীনের সিচুয়ানের রেশম শিল্প” (মূলঃ চ্বোং পিংচ্বাং, লু ওয়েইফ্বিং, হুয়াং স্বিউচ্বোং) (২০২১), “চীনা লিপিকলা” (মূলঃ লি শংহোং, লিউ চ্বং) (২০২২) প্রভৃতি।
উল্লেখ্য যে, ড. মোহাম্মদ সাদী ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্ৰহণ করেন। তিনি ভালো ফলাফলসহ কলেজের গন্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে ২০০১ সালে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর একই বছরে শিলাইদহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৬ সালে সিঙ্গাপুর যান সিঙ্গাপুর ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট ইনষ্টিটিউটে ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অধ্যয়নের জন্য। মূলত: সেখান থেকেই তাঁর চীনাভাষা শেখার হাতে খড়ি। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে এসে পর্যটন বিষয়ে কাজ শুরু করেন। একইসাথে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনষ্টিটিউটে চীনাভাষা রপ্ত করতে থাকেন। ২০০৯ সালে চীন সরকারের বৃত্তি নিয় চলে যান চায়না।