শুভ্র মজুমদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ৩০ লাখ টাকা যৌতুক না দেওয়ায় ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২২ বছর বয়সী গৃহবধূ ফারহানা ফারিহা ওরফে কাজল। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহরের শাকিন রেজিস্ট্রি পাড়ার একটি ভাড়া বাসায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
ফারহানা জানান, চলতি বছরের ১৩ জুলাই রাতে কালিহাতীর ভবানীপুরে স্বামীর বাড়িতে স্বামী শওকত হোসেন তালুকদার ওরফে ঠান্ডু, ভাসুর মমিন তালুকদার ও জা আকলিমা মিলে তাকে ঘরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নেওয়া হয় তিনটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এবং আত্মসাৎ করা হয় দুটি ব্ল্যাংক চেক (নং: এমএসডব্লিউ ৩৭৮২৩৩৬ ও ৩৭৮২৩৩৭)।
পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং ১৪ জুলাই তিনি কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি মায়ের সহায়তায় টাঙ্গাইল শহরের একটি ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। তার পৈতৃক বাড়ি কালিহাতীর নারান্দিয়া ইউনিয়নের কাছিনা লখাই গ্রামে।
এই ঘটনায় ফারহানা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন, যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৩৮৬, ৩৭৯, ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় নথিভুক্ত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে ফারহানা বলেন, আমি শুধু একজন স্ত্রী নই, একজন মানুষ। অথচ আমাকে বারবার টাকার কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছে ওরা। আমি ন্যায়বিচার চাই।
তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা শুধু পারিবারিক কলহ নয়, বরং এটি নারীর অধিকার, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি যৌতুকবিরোধী আইন বাস্তবায়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান, যাতে ভবিষ্যতে কোনো নারী তার মতো পরিস্থিতির শিকার না হন।