মোঃ সাইফুল্লাহ :
মাগুরার শ্রীপুর সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে গত ২৩ জুন রবিবার সকালে ৭০ হাজার টাকা তোলেন উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের টুপিপাড়া গ্রামের মোছাঃ শিউলী বেগম। ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা টাকায় যে জাল নোট ছিল সেটা তিনি বুঝতে পারেননি তখন। বিপত্তি ঘটে যখন টাকাটা অগ্রণী ব্যাংক শ্রীপুর শাখায় যেয়ে ছেলে মোস্তফা খানের একাউন্টে জমা দিতে যান তখন। এক হাজার টাকার ২০ খানা নোট কাউন্টারে জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নোটগুলো জাল হিসেবে শনাক্ত করেন কাউন্টারম্যান বাবু। টাকাগুলো যেখান থেকে নেওয়া হয়েছে দ্রুত সেখানে ফেরত দিতে বলেন কাউন্টারম্যান। হতভম্ব হয়ে তখন কাউন্টার ত্যাগ করেন শিউলি । প্রথমে সোনালী ব্যাংক টাকাগুলো ফেরত দিতে রাজী না হলেও পরে ওই ভুক্তভোগী নারীর প্রতিবাদের মুখে টাকাগুলো ফেরত নিতে বাধ্য হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হওয়ায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে শিউলি বেগম জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শ্রীপুর সোনালী ব্যাংকে আমার একাউন্ট থেকে ৭০ হাজার তুলি। এক বান্ডিলে ১’শ খানা ৫০০ টাকার নোট ও ২০ খানা এক হাজার নোট দেয় ব্যাংক। আমি এই টাকাগুলো শ্রীপুর অগ্রণী ব্যাংকে আমার ছেলে মোস্তফা খানের একাউন্টে দিতে গেলে কাউন্টারে ৫০০ টাকার বান্ডিল নেন। পরে এক হাজার টাকার নোটগুলো হাতে নেওয়ার সাথে সাথে এক হাজার টাকার একটি নোট কাউন্টারম্যান ছিড়ে দেন। এবং বাকি ১৯ হাজার টাকা জাল বলে দ্রুত সেখান থেকে তুলেছি সেখানে ফেরত দিতে বলেন। আমি টাকাগুলো সোনালী ব্যাংকে ফেরত দিতে গেলে ব্যাংকের কাউন্টারম্যান নানান তালবাহানা শুরু করেন। পরে অনেক কষ্টে টাকাগুলো ফেরত দিতে পারলেও ছেড়া ওই জাল নোটটি ফেরত নেয়নি ব্যাংক। এখন তারা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, আমি নাকি জাল টাকা বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে তাদের হেনস্তা করছি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর অগ্রণী ব্যাংকের কাউন্টারম্যান বাবু ভুক্তভোগী ওই নারীকে এক হাজার টাকার সম্পূর্ণ টাকাগুলো জাল বললেও সাংবাদিকদের কাছে তিনি উল্টো বক্তব্য দিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রবিবার দুপুরে এক মহিলা ব্যাংকে ৭০ হাজার টাকা জমা দিতে আসেন। তার মধ্যে ১’শ খানা ৫০০ টাকার নোট ও ২০ খানা এক হাজার টাকার নোট। এক হাজার টাকার নোটের বান্ডিলে ১ খানা জাল নোট পাওয়া যায়। পরে তিনি ওই টাকাগুলো জমা না দিয়ে টাকাগুলো ফেরত নিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে শ্রীপুর সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার কামাল আহম্মেদ জানান, আমাদের ব্যাংক থেকে দেওয়া সম্পূর্ণ টাকার মধ্যে কোন জাল টাকা ছিল না। ওই মহিলার কাছে যে টাকা ছিল হয়তো তার মধ্যে জাল টাকা ছিল।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মমতাজ মহল বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর আসল ঘটনা জানা যাবে।
এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।