শুভ্র মজুমদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর বুকে নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলসেতুতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পটি দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব কিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এই সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সেতুর দুই প্রান্ত—টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ—থেকে দুটি ট্রেন চালানো হয়। ঘণ্টায় ১০, ২০ এবং সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলার পর পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়। প্রকল্প পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের যৌথ প্রচেষ্টায় কোনো ত্রুটি ছাড়াই এই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলসেতুটি দেশের দীর্ঘতম ডাবল ট্র্যাক ডুয়েল গেজ সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর নির্মিত ৪৯টি স্প্যান বিশিষ্ট এই সেতুটি জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬,৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর মাধ্যমে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ শুরু হলেও সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ার পর ২০০৮ সালে রেল যোগাযোগে সীমাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর ফলে আধুনিক রেল যোগাযোগের চাহিদা মেটাতে নতুন রেলসেতুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
২০২০ সালের আগস্টে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। এটি চালু হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, অর্থনীতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
যমুনা নদীর বুকে এই রেলসেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, বরং উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবনে নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে।