শুভ্র মজুমদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘর ইউনিয়নের কচিমধরা গ্রামের বাসিন্দা ইয়ার মাহমুদ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। বিশেষ কৌশলে নিজেকে “স্যার” পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
প্রতারিত ৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা, তিন বছরেও চাকরি মেলেনি
প্রতারক চক্রের শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার কাশিনগর গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া। ছেলের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইয়ার মাহমুদ তার কাছ থেকে ৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। সেনাবাহিনীতে ওয়েটারের চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে এই টাকা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তিন বছর পার হলেও চাকরি তো দূরের কথা, টাকা ফেরত দিতেও নানা তালবাহানা করছেন ইয়ার মাহমুদ।
ভুক্তভোগী লাল মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করে কষ্টার্জিত টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমার টাকা ফেরত পাচ্ছি না। উল্টো আমাকে বিভ্রান্ত করতে কখনো কার্টিজ পেপারে, কখনো সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আমি একজন সাধারণ মানুষ, ন্যায়বিচার চাই।”
প্রতারণার অভিযোগ, তদন্তের দাবি এই প্রতারণার শিকার হয়ে লাল মিয়া সম্প্রতি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনি তার হারানো অর্থ ফেরত পেতে এবং প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজ মেম্বার বলেন,
“ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয় পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। প্রয়োজন হলে প্রমাণাদি যাচাই করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
প্রতারক চক্র এখনো সক্রিয়!
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ইয়ার মাহমুদ প্রতারণার জন্য দুটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেন এবং কখনো “শাহ আলম” নামে পরিচয় দেন। সংবাদ সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে গোপনে দেখা করার প্রস্তাব দেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।
এলাকাবাসীর দাবি
“এ ধরনের প্রতারণা চক্রের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। লাল মিয়ার মতো আর কেউ যেন প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ
প্রতারণার শিকার লাল মিয়া ও স্থানীয়রা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা আশা করছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।