শুভ্র মজুমদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মুক্তির মাধ্যমে রচিত হয় মুক্তিযুদ্ধের এক গৌরবময় অধ্যায়। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা টাঙ্গাইলকে হানাদারমুক্ত করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। মিত্রবাহিনীর ছত্রী সেনারা কালিহাতীর পৌলী ব্রিজ এলাকায় নেমে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হন। টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করেও পরাজয় নিশ্চিত দেখে দখলদার পাকিস্তানি সেনারা টাঙ্গাইল ছেড়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়।
কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণে ১০ ডিসেম্বর রাতে টাঙ্গাইল পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয়। বীর কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক ভোলা সদর থানা দখল করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি আজও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
১১ ডিসেম্বর ভোরে টাঙ্গাইলে প্রবেশ করেন কমান্ডার খন্দকার বায়েজিদ আলম ও খন্দকার আনোয়ার হোসেন। দক্ষিণ দিক থেকে ব্রিগেডিয়ার ফজলুর রহমান এবং ময়মনসিংহ সড়ক দিয়ে সাঁজোয়া বহরসহ প্রবেশ করেন কাদের সিদ্দিকী। শহরের সীমান্তে প্রবেশের পর পাকিস্তানি সেনারা তাদের বহরে হামলা চালালেও মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্দমনীয় পাল্টা আক্রমণে শত্রুরা একে একে পরাজিত হয়। সার্কিট হাউজে আত্মসমর্পণ করে অবশিষ্ট পাকিস্তানি সেনারা।
টাঙ্গাইলের মুক্তির সংবাদে শহরজুড়ে বইতে থাকে আনন্দের বন্যা। রাস্তায় নেমে আসে সাধারণ মানুষ, সমগ্র শহর উৎসবের মিছিলে পরিণত হয়।
এ বছর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস সীমিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হলেও, সেই গৌরবগাথা আজও টাঙ্গাইলের মানুষের হৃদয়ে অম্লান।