মিরসরাই প্রতিনিধি : এ.এইচ.সেলিম
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভয়াবহ বন্যায় ৭০০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনেক চাষি। ক্ষতি পুষিয়ে কীভাবে নতুন করে ব্যবসা শুরু করবেন সে চিন্তায় ঘুম হারাম অনেকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০ হাজার একর জমিতে গড়ে উঠা এসব মৎস্য প্রকল্প থেকে বছরে ৫০ হাজার টনের বেশি মাছ উৎপাদন হয়। এসব মৎস্য প্রকল্প থেকে এক হাজার ১২৭ কোটি টাকার মাছ বিক্রি করেন চাষিরা। মুহুরীর চর মৎস্য প্রকল্প থেকে প্রতিদিন ৭০-৮০ টনের বেশি মাছ দেশের বিভিন্ন বাজারে যায়।
ওই এলাকার ফারুক সওদাগরের ১০ কোটি টাকা, সমমনা সমিতির প্রায় এক কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। শেখ ফরিদের ৪০ কোটি টাকা, শাহ আলমের চার কোটি টাকা, হেলাল উদ্দিন হেলাল সাবের ১০ কোটি টাকা, কামাল ও সাদেকের ৬ কোটি টাকা, মহি উদ্দিন সওদাগরের এক কোটি টাকা, সততা ফার্ম এর দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আরেক চাষি তৌহিদুল তুহিন বলেন, মিরসরাইয়ে আমার ২৫ একর ও সোনাগাজী অংশে ১০ একরের মৎস্য খামারসহ শ্রমিকদের বাসস্থান ও খাদ্য রাখার ঘর, নলকূপ সব মুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমার মত আরও শত শত মৎস্য চাষি রয়েছেন। অনেকের ব্যাংক লোন রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে মাছের খাদ্য ও ওষুধের দোকানের বকেয়া। এসব ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মুহুরী প্রজেক্ট মৎস্য চাষি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৎস্যজোন প্রতিষ্ঠান হওয়ার পর থেকে এমন ভয়াল বিপর্যয়ে পড়েনি মৎস্য চাষিরা। এবারের বন্যায় অনেক চাষি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। আমরা চাষিদের পক্ষ থেকে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা জমা দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা না পেলে এ শিল্পে অনেকের টিতে খাকতে কষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, তিল তিল করে গড়ে ওঠা স্বপ্নের বিনিয়োগ তাসের ঘরের মতো ধ্বংস হয়ে গেছে। এ বন্যায় মৎস্য চাষিদের প্রায় প্রতি একরে ১০ লাখ করে ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, মিরসরাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মৎস্য খাতে আমাদের প্রাপ্ত তথ্যে প্রায় ৩৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য চাষিদের দাবি ক্ষতির অংকটা ৭০০ কোটি টাকা। তবে আমরা এখনো তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি।